
আপনি কি আপনার খরচ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুঁজছেন? অনেক চেষ্টা করেও কিছু অতিরিক্ত খরচ করে ফেলছেন যা না করলেও পারতেন। অথবা এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাথে খরচ করতে পারতেন। আহ! আফসোস করছেন? এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হল। দেখুন না খরচের অভ্যাস পরিবর্তন হয় কি নাঃ
১। আপনার কেনাকাটার কারন বুঝতে চেষ্টা করুনঃ
আপনার কেনাকাটার কারন কি তা চিন্তা করে ঠিক করুন। আপনার যখন মন খারাপ থাকে তখনই কি কেনাকাটা করছেন? নাকি আপনার বন্ধুদের কাছে নিজের সামাজিক মর্যাদা বাড়িয়ে তুলতে কেনাকাটা করছেন? অথবা যেদিন বেতন পাচ্ছেন, সেদিন হাতে টাকা আছে বিধায় ইচ্ছা মত খরচ করছেন? শপিং মল এ না যেয়ে বরং বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় কাটান।
২। আপনার সাপ্তাহিক বাজেটের দিকে লক্ষ্য রাখুনঃ
আমাদের মধ্যে অনেকেই সাধারণত মাসিক বাজেটের দিকে মনযোগী থাকেন। এর বদলে সাপ্তাহিক বাজেটের উপর গুরুত্ব দিন, তখনই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার টাকা কত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে আসছে। ব্যাংকের টাকা উত্তোলন না করার চেষ্টা করুন এবং হাতে যা আছে, তা দিয়েই যাবতীয় খরচ সামাল দিন।
৩। দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের লক্ষ্য স্থির করুনঃ
দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় লক্ষ্য স্থির করার ফলে আপনার খরচের পরিমান কমে আসবে। জমি কেনা, বাড়ি তৈরি, সন্তানের উচ্চ শিক্ষা – যে কোন কারনেই আপনি এই উদ্যেগ নিতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের লক্ষ্যই আপনাকে শপিং মলে অতিরিক্ত খরচ করতে সময় সতর্ক করে দিবে।
৪। ক্রেডিট কার্ড সাথে রাখবেন নাঃ
ক্রেডিট কার্ড যখন সাথে থাকবে, আপনার খরচের পাল্লা তখন ভারি হতে থাকবে। যদিও সবাই যে এটি ব্যবহার করে না। যখন বাজারে যাবেন, ক্রেডিট কার্ডটি বাসায় রেখে যান।
৫। বাজারে/ শপিং মলে যাওয়া নিয়ন্ত্রন করুনঃ
যদিও এটি শুনতে একটু অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু এটা সত্যিই কাজ করে! হয়তবা আপনি একটি ছোট্ট দুধের প্যাকেট কিনতে বাজারে গেলেন, কিন্তু এমন কিছু আপনার চোখে পড়ে গেল, যেটা কেনার কথা আপনি অনেক দিন ধরেই ভাবছিলেন এবং দাম তাও আপনার নাগালের মধ্যেই! সপ্তাহে একবার যান বাজারে আর ঘোরাঘুরি না করে যা লাগবে, তা কিনেই চলে আসুন।
৬। সাথে শুধু টাকা নিনঃ
ঘুরতে যেয়ে কেনাকাটা বা মুদি দোকানের কেনাকাটা, যেটার জন্যই যান না কেন, আপনার কত টাকা লাগতে পারে, তা হিসাব করে সঙ্গে নিয়ে নিন। আপনার ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, চেক বই, সব গুলো বাসাই রেখে যান। এরপর বাজেটের মধ্যে থাকা ছাড়া আপনার উপায় নেই, ফলে বাড়তি খরচের আশঙ্কাও থাকবে না।
৭। খরচ করার তাড়নাকে প্রশমন করুনঃ
নিজের খরচ করার তাড়নাকে প্রশমন করতে শিখুন। নিজের মনকে প্রশ্ন করুন, আপনি যা কিনতে যাজ্ছেন, এটা কি আসলেই খুব বেশী জরুরী ? নাকি এটা ছাড়াই আপনার কাজ চলবে? নিজের কাছে সৎ থেকে প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিন, দেখবেন আপনি অতিরিক্ত খরচের তাড়নাকে ঠিকই কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
৮। মানসিকতার পরিবর্তন করুনঃ
আমাদের মধ্যে অনেকের এই ধরনের মনভাব রয়েছে, যে আমরা যা খুশী তাই কিনতে পারার মাঝেই প্রকৃত সুখ বিদ্যমান। এর ফলে আমরা নিজেকে আর্থিক ভাবে সামর্থ্যবান মনে করে আত্মতৃপ্তি লাভ করি। নিজের এই মনভাবের পরিবর্তন করুন। টাকা খরচ করাতে নয়, বরং জমানোতেই আত্মতৃপ্তি খুজতে হবে। কারন যখন আপনি একটি বড় অংকের টাকা জমাতে পারবেন, আপনি অনায়াসে আপনার চাহিদা গুলো পূরণ করতে পারবেন, এভাবেই ভাবতে শিখুন।
৯। নির্দিষ্ট জিনিস কেনার মনস্থির করে বাজারে যানঃ
আপনার যা লাগবে সেটা কিনার মনস্থির করেই বাজারে যান। তাহলে আপনি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য অন্য দোকানে ঘোরার প্রয়োজনীয় অনুভব করবেন না।
খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা সহজ হবে না। চাহিদা প্রথম আসে, তারপর প্রয়োজন। সঞ্চয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার ভবিষ্যৎ ও পরিবার, উভয়কে সুরক্ষিত করতে পারবেন।
পরিশেষেঃ ক্ষমা করবেন, আমি কিন্তু খরচ নিয়ন্ত্রন করতে পারি না। আর পারিনা বলেই এই বিষয়গুলি নিয়ে একটু পড়াশুনা করলাম এবং যা পেলাম তার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরন আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না। আরো ভাল কিছু নিশ্চয়ই আপনাদের জানা আছে, থাকলে এখানে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি।