
আপনি কি সত্যিই ধূমপান ছাড়তে চান? তাহলে আপনার জীবনযাত্রায় কিছু ক্ষুদ্র পরিবর্তন এনে আপনি আবার সিগারেট ধরানোর ইচ্ছা থেকে পরিত্রান পেতে পারেনঃ
ইতিবাচক চিন্তা করুনঃ
আপনি হয়ত বা আগে চেষ্টা করেও সিগারেট ছাড়তে পারেন নি, কিন্তু নিজেকে বলুন যে এইবার আপনি অবশ্যই এটি করেই ছাড়বেন।
সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ
প্রতিজ্ঞা করুন যে এইবার সিগারেট ছেড়ে দিবেন, একটি দিন ঠিক করুন এবং সেটি বজায় রাখুন। যে কোন অনুষ্ঠান, যেমন – বিয়ে, কোন পার্টি বা অন্য যে কোন উপলক্ষের অজুহাতে আপনার প্রতিজ্ঞা ভাঙবেন না।
আপনার খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করুনঃ
রাতের খাবার খাওয়া শেষে কি একটি সিগারেট আপনার খুব প্রিয়? মার্কিন যুক্তরাজ্যে পরিচালিত এক গবেষণায় জানা যায় যে, কিছু খাবার, যেমন মাংস খাওয়ার পর, সিগারেট খাওয়া আরও বেশী পরিতৃপ্তিকর হয়ে উঠে। এবার, অন্য কিছু খাবার যেমন- চীজ, ফলমূল বা সবজি, এগুলো খাওয়ার পর, সিগারেট খাওয়া অসহনীয় মনে হয়। তাই প্রতিদিন মাংস বা মাংস জাতীয় খাবারের পরিবর্তে সবজি জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আপনার পানীয় গ্রহনের অভ্যাস পরিবর্তন করুনঃ
বিভিন্ন ধরনের তরল পানীয়, অ্যালকোহল, কোকাকোলা, চা বা কফি, এগুলো সব গুলোই সিগারেটের স্বাদ বাড়িয়ে তুলে। তাই আপনি যখন বাইরে থাকবেন, বেশী পরিমানে পানি ও ফলের রস পান করুন। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, শুধু মাত্র পানীয় গ্রহনের ধরনের পরিবর্তনের মাধ্যমে সিগারেটের নেশা কাটিয়ে উঠা যায়।
কখন আপনার সিগারেটের নেশা চাপে, তা সনাক্ত করুনঃ
সিগারেটের তীব্র আকাংখা যখন জাগবে, তখন এই তীব্রতা ৫ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারে। যখনি আপনার সিগারেটের জন্য ইচ্ছা জাগবে, তখন আপনার মনোযোগ অন্য দিকে নিবিষ্ট করুন। যেমনঃ আপনার কোন প্রিয় শখ বা কাজে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখুন। এবং নিজেকে বার বার স্মরন করিয়ে দিন, সিগারেট ও অ্যালকোহল এক সাথে গ্রহন করার ফলে আপনার মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
হাঁটাহাঁটি করুনঃ
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা পর্যালোচনা হতে জানা যায়, ৫ মিনিটের জন্য হেঁটে আসা বা খালি হাতে ব্যায়ামের ফলে আপনার মস্তিস্কে সিগারেটের তীব্র আকাঙ্ক্ষার বিরোধী এক জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন হতে পারে, যার ফলে আপনার মধ্যে ধূমপানের যে প্রবল ইচ্ছা জেগে ছিল, সেটা কমে যাবে।
অধূমপায়ীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুনঃ
বন্ধুদের আড্ডায় যখন বসবেন, তখনি অধূমপায়ী বন্ধুদের সাথে বেশী সময় কাটান। ধূমপায়ী বন্ধুদের দেখে ঈর্ষা কাতর হবেন না। বরং এটা ভাবুন, সিগারেটের কারনে তারা নিজেদেরকে কত টুকু ক্ষতি গ্রস্থ করছেন।
সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পিছনে এর কারন গুলোর একটি তালিকা তৈরি করুনঃ
নিজেকে সব সময় স্মরন করিয়ে দিন, কেন আপনি সিগারেট ছেড়ে দিচ্ছেন। কারন গুলো লিখে একটি তালিকা তৈরি করে রাখুন এবং যখন আপনার মনে হবে সিগারেট ছাড়া থাকতে পারছেন না, তখন তালিকাটি পড়ুন।
উল্লেখিত পদ্ধতি গুলোর যে কোন একটি বা কয়েকটি উপায় একসাথে মেনে চললে আপনি অবশ্যই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে পারবেন। স্বাস্থ্য সম্মত খাবার খান, প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন এবং খুব বেশী ধূমপানের ইচ্ছা জাগলে বিকল্প হিসেবে চুইংগাম বা বাদাম জাতীয় কিছু খেতে পারেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আস্তে আপনার সৎ ইচ্ছাই যথেষ্ট ।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.